পাল পড়েছে ঢিলে হয়ে।
দূর্বাঘাস উপবাসে শীর্ণ ;
কাঁকর-ঢালা পথের ধারে
বিলিতি মৌসুমি চারায়
ফুলগুলি রঙ হারিয়ে সংকুচিত।
হাওয়া দিয়েছে পশ্চিম দিক থেকে —
বিদেশী হাওয়া চৈত্রমাসের আঙিনাতে।
গায়ে দিতে হল আবরণ অনিচ্ছায় ।
বাঁধানো জলকুণ্ডে জল উঠছে শিরশিরিয়ে,
টলমল করছে নালগাছের পাতা,
লাল মাছ কটা চঞ্চল হয়ে উঠল।
নেবুঘাস ঝাঁকড়া হয়ে উঠেছে
খেলা-পাহাড়ের গায়ে।
তার মধ্যে থেকে দেখা যায়
গেরুয়া পাথরের চতুর্মুখ মূর্তি।
সে আছে প্রবহমান কালের দূর তীরে
উদাসীন ;
ঋতুর স্পর্শ লাগে না তার গায়ে।
শিল্পের ভাষা তার,
গাছপালার বাণীর সঙ্গে কোনো মিল নেই।
ধরণীর অন্তঃপুর থেকে যে শুশ্রূষা
দিনে রাতে সঞ্চারিত হচ্ছে
সমস্ত গাছের ডালে ডালে পাতায় পাতায়,
ওই মূর্তি সেই বৃহৎ আত্মীয়তার বাইরে।
মানুষ আপন গূঢ় বাক্য অনেক কাল আগে
যক্ষের মৃত ধনের মতো
ওর মধ্যে রেখেছে নিরুদ্ধ ক ' রে,
প্রকৃতির বাণীর সঙ্গে তার ব্যবহার বন্ধ।
সাতটা বাজল ঘড়িতে।
ছড়িয়ে-পড়া মেঘগুলি গেছে মিলিয়ে।