ফাল্গুনের রঙিন আবেশ
যেমন দিনে দিনে মিলিয়ে দেয় বনভূমি
নীরস বৈশাখের রিক্ততায়,
তেমনি করেই সরিয়ে ফেলেছ হে প্রমদা, তোমার মদির মায়া
অনাদরে অবহেলায়।
একদিন আপন হাতে আমার চোখে বিছিয়েছিলে বিহ্বলতা,
রক্তে দিয়েছিলে দোল,
চিত্তে ভরেছিলে নেশায়, হে আমার সাকী,
পাত্র উজাড় ক ' রে
জাদুরসধারা আজ ঢেলে দিয়েছ ধুলায় ।
আজ উপেক্ষা করেছ আমার স্তুতিকে,
আমার দুই চক্ষুর বিস্ময়কে ডাক দিতে ভুলে গেলে ;
আজ তোমার সাজের মধ্যে কোনো আকুতি নেই ;
নেই সেই নীরব ঝংকার
যা আমার নামকে দিয়েছিল রাগিণী।
শুনেছি একদিন চাঁদের দেহ ঘিরে
ছিল হাওয়ার আবর্ত।
তখন ছিল তার রঙের শিল্প,
ছিল সুরের মন্ত্র,
ছিল সে নিত্য নবীন।
দিনে দিনে উদাসী কেন ঘুচিয়ে দিল
আপন লীলার প্রবাহ।
কেন ক্লান্ত হল সে আপনার মাধুর্যকে নিয়ে।
আজ শুধু তার মধ্যে আছে
আলোছায়ার মৈত্রীবিহীন দ্বন্দ্ব —
ফোটে না ফুল,
বহে না কলমুখরা নির্ঝরিণী।