কোনো উত্তর করলেম না।
বললেম না, প্রয়োজন ছিল না এই তুচ্ছ ছলনার।
বললেম না, আজ সহজে বলতে পারতে ‘ এসো ',
বলতে পারতে ‘ খুশি হয়েছি '।
মধুময়ের উপর পড়ল ধুলার আবরণ।
পরদিন ছিল হাটবার
জানলায় বসে দেখছি চেয়ে।
রৌদ্র ধূ ধূ করছে পাশের সেই খোলা ছাদে।
তার স্পষ্ট আলোয় বিগত বসন্তরাত্রের বিহ্বলতা
সে দিয়েছে ঘুচিয়ে।
নির্বিশেষে ছড়িয়ে পড়ল আলো মাঠে বাটে,
মহাজনের টিনের ছাদে,
শাক-সবজির ঝুড়ি-চুপড়িতে,
আঁটিবাঁধা খড়ে,
হাঁড়ি-মালসার স্তূপে,
নতুন গুড়ের কলসীর গায়ে।
সোনার কাঠি ছুঁইয়ে দিল
মহানিম গাছের ফুলের মঞ্জরিতে।
পথের ধারে তালের গুঁড়ি আঁকড়ে উঠেছে অশথ,
অন্ধ বৈরাগী তারই ছায়ায় গান গাইছে হাঁড়ি বাজিয়ে —
কাল আসব বলে চলে গেল,
আমি যে সেই কালের দিকে তাকিয়ে আছি।
কেনাবেচার বিচিত্র গোলমালের জমিনে
ওই সুরের শিল্পে বুনে উঠছে
যেন সমস্ত বিশ্বের একটা উৎকন্ঠার মন্ত্র — ‘ তাকিয়ে আছি। '
একজোড়া মোষ উদাস চোখ মেলে
বয়ে চলেছে বোঝাই গাড়ি,
গলায় বাজছে ঘণ্টা,
চাকার পাকে পাকে টেনে তুলছে কাতর ধ্বনি।