একদিন আষাঢ়ে নামল
বাঁশবনের মর্মর-ঝরা ডালে
জলভারে অভিভূত নীলমেঘের নিবিড় ছায়া।
শুরু হল ফসল-খেতের জীবনীরচনা
মাঠে মাঠে কচি ধানের চিকন অঙ্কুরে।
এমন সে প্রচুর, এমন পরিপূর্ণ, এমন প্রোৎফুল্ল,
দ্যুলোকে ভূলোকে বাতাসে আলোকে
তার পরিচয় এমন উদার-প্রসারিত —
মনে হয় না সময়ের ছোটো বেড়ার মধ্যে তাকে কুলাতে পারে
তার অপরিমেয় শ্যামলতায়
আছে যেন অসীমের চির-উৎসাহ,
যেমন আছে তরঙ্গ-উল্লোল সমুদ্রে।
মাস যায়।
শ্রাবণের স্নেহ নামে আঘাতের ছল ক ' রে,
সবুজ মঞ্জরি এগিয়ে চলে দিনে দিনে
শিষগুলি কাঁধে তুলে নিয়ে
অন্তহীন স্পর্ধিত জয়যাত্রায়।
তার আত্মাভিমানী যৌবনের প্রগল্ভতার 'পরে
সূর্যের আলো বিস্তার করে হাস্যোজ্জ্বল কৌতুক,
নিশীথের তারা নিবিষ্ট করে নিস্তব্ধ বিস্ময়।
মাস যায়।
বাতাসে থেমে গেল মত্ততার আন্দোলন,
শরতের শান্তনির্মল আকাশ থেকে
অমন্দ্র শঙ্খধ্বনিতে বাণী এল —
প্রস্তুত হও।
সারা হল শিশিরজলে স্নানব্রত।