বসে আছি নির্নিমেষ চোখে
অতীতের সেই ধ্যানালোকে—
নি:শব্দ তিমিরতটে জীবনের বিস্মৃত রাতির।
হে অতীত,
শান্ত তুমি নির্বাণ - বাতির
অন্ধকারে,
সুখদুখনিষ্কৃতির পারে ।
শিল্পী তুমি, আঁধারের ভূমিকায়
নিভৃতে রচিছ সৃষ্টি নিরাসক্ত নির্মম কলায়,
স্মরণে ও বিস্মরণে বিগলিত বর্ণ দিয়া লিখা
বর্ণিতেছ আখ্যায়িকা ;
পুরাতন ছায়াপথে নূতন তারার মতো
উজ্জ্বলি উঠিছে কত,
কত তার নিভাইছ একেবারে
যুগান্তের অশান্ত ফুৎকারে।
আজ আমি তোমার দোসর,
আশ্রয় নিতেছি সেথা যেথা আছে মহা - অগোচর।
তব অধিকার আজি দিনে দিনে ব্যাপ্ত হয়ে আসে
আমার আয়ুর ইতিহাসে।
সেথা তব সৃষ্টির মন্দিরদ্বারে
আমার রচনাশালা স্থাপন করেছি একধারে
তোমারি বিহারবনে ছায়াবীথিকায়।
ঘুচিল কর্মের দায়,
ক্লান্ত হল লোকমুখে খ্যাতির আগ্রহ ;
দুঃখ যত সয়েছি দুঃসহ
তাপ তার করি অপগত
মূর্তি তারে দিব নানামতো
আপনার মনে মনে।
ক লকোলাহলশান্ত জনশূন্য তোমার প্রাঙ্গণে,
যেখানে মিটেছে দ্বন্দ্ব মন্দ ও ভালোয়,
তারার আলোয়
সেখানে তোমার পাশে আমার আসন পাতা—
কর্মহীন আমি সেথা বন্ধহীন সৃষ্টির বিধাতা।