Published on রবীন্দ্র রচনাবলী (http://rabindra-rachanabali.nltr.org)
পূরবী- চঞ্চল, ১
চঞ্চল
হায় রে তোরে রাখব ধরে,
ভালোবাসা,
মনে ছিল এই দুরাশা।
পাথর দিয়ে ভিত্তি ফেঁদে
বাসা যে তোর দিলেম বেঁধে,
এল তুফান সর্বনাশা।
মনে আমার ছিল যে রে
ঘিরব তোরে হাসির ঘেরে—
চোখের জলে হল ভাসা।
অনেক দুঃখে গেছে বোঝা
বেঁধে রাখা নয় তো সোজা,
সুখের ভিতে নহে তোমার
অচল বাসা।
পথের শেষে
বাঁধব বাসা মেঘের দেশে।
ক্ষণে ক্ষণে নিত্যনব
বদল কোরো মূর্তি তব
রঙ-ফেরানো মায়ার বেশে।
কখনো বা জ্যোৎস্না-ভরা
কখনো বা বাদল-ঝরা
খেয়াল তোমার কেঁদে হেসে।
যেই হাওয়াতে হেলাভরে
মিলিয়ে যাবে দিগন্তরে
সেই হাওয়াতেই ফিরে ফিরে
আসবে ভেসে।
কঠিন মাটি বানের জলে
যায় যে বয়ে,
শৈলপাষাণ যায় তো ক্ষ’য়ে।
ভালোবাসা,
মনে ছিল এই দুরাশা।
পাথর দিয়ে ভিত্তি ফেঁদে
বাসা যে তোর দিলেম বেঁধে,
এল তুফান সর্বনাশা।
মনে আমার ছিল যে রে
ঘিরব তোরে হাসির ঘেরে—
চোখের জলে হল ভাসা।
অনেক দুঃখে গেছে বোঝা
বেঁধে রাখা নয় তো সোজা,
সুখের ভিতে নহে তোমার
অচল বাসা।
এবার আমি সব-ফুরানো
পথের শেষে
বাঁধব বাসা মেঘের দেশে।
ক্ষণে ক্ষণে নিত্যনব
বদল কোরো মূর্তি তব
রঙ-ফেরানো মায়ার বেশে।
কখনো বা জ্যোৎস্না-ভরা
কখনো বা বাদল-ঝরা
খেয়াল তোমার কেঁদে হেসে।
যেই হাওয়াতে হেলাভরে
মিলিয়ে যাবে দিগন্তরে
সেই হাওয়াতেই ফিরে ফিরে
আসবে ভেসে।
কঠিন মাটি বানের জলে
যায় যে বয়ে,
শৈলপাষাণ যায় তো ক্ষ’য়ে।