আলোকের আভা তার অলকের চুলে,
বুকের কাছেতে হাঁটু তুলে
বসে আছে ঠেস দিয়ে পিপুলগুঁড়িতে,
পাশেই পাহাড়ে নদী নুড়িতে নুড়িতে
ফুলে উঠে চলে যায় বেগে।
দেবদারু-ছায়াতলে উঠে জেগে
কলস্বর,
কান পেতে শোনে তাই প্রাচীন পাথর —
অরণ্যের কোল
যেন মুখরিয়া তোলে শিশুর কল্লোল।
ইংরেজ কবির লেখা একমনে পড়িছে তরুণী,
গুন্গুন্ রব তার পিছনে দাঁড়ায়ে আমি শুনি ;
মৃদু বেদনায় ভাবি, যে-কবির বাণী
পড়িছে বিরাম নাহি মানি,
আমি কেন সে কবি না হই।
এতদিন নানাভাবে কাব্যে যাহা কই
আজি এ গিরির মতো কেন সে নির্বাক।
অদূরে মাদার-শাখে ঘুঘু দেয় ডাক।
আমার মর্মের ছন্দ পাখির ভাষায়
অফুরান নৈরাশায়
উছলিতে থাকে একতানে
আন-মননীর কানে কানে।
আতপ্ত হতেছে দিন, শিশির শুকায়ে গেছে ঘাসে,
অজানা ফুলের গুচ্ছ উচ্চ শাখে দুলিছে বাতাসে ।
ঢালু তটে তরুচ্ছায়াতলে
ঝিলিমিলি শিহরন ঝরনার জলে।
চূর্ণ কেশে নিত্য চঞ্চলতা,
দুর্বাধ্য পড়িছে চোখে, অধ্যয়নরতা
সরায়ে দিতেছে বারংবার
বাহুক্ষেপে। ধৈর্য মোর রহিল না আর ;