Published on রবীন্দ্র রচনাবলী (http://rabindra-rachanabali.nltr.org)
পূরবী- শীত, ১
শীত
শীতের হাওয়া হঠাৎ ছুটে এল
গানের বেলা শেষ না হতে হতে?
মনের কথা ছড়িয়ে এলোমেলো
ভাসিয়ে দিল শুকনো পাতার স্রোতে।
মনের কথা যত
উজান তরীর মতো;
পালে যখন হাওয়ার বলে
মরণ-পারে নিয়ে চলে,
চোখের জলের স্রোত যে তাদের টানে
পিছু ঘাটের পানে—
যেথায় তুমি, প্রিয়ে
একলা বসে আপন-মনে
আঁচল মাথায় দিয়ে।
কাঁপন-ভরা হিমের বায়ুভরে।
ঝরা ফুলের পাপড়ি তাদের ঢাকে—
লুটায় কেন মরা ঘাসের’পরে।
হল কি দিন সারা।
বিদায় নেবে তারা?
এবার বুঝি কুয়াশাতে
লুকিয়ে তারা পোউষ-রাতে
ধুলার ডাকে সাড়া দিতে চলে—
যেথায় ভূমিতলে
একলা তুমি, প্রিয়ে,
বসে আছ আপন-মনে
আঁচল মাথায় দিয়ে?
ফুরায়নি তো, ফুরাবার এই ভান।
গানের বেলা শেষ না হতে হতে?
মনের কথা ছড়িয়ে এলোমেলো
ভাসিয়ে দিল শুকনো পাতার স্রোতে।
মনের কথা যত
উজান তরীর মতো;
পালে যখন হাওয়ার বলে
মরণ-পারে নিয়ে চলে,
চোখের জলের স্রোত যে তাদের টানে
পিছু ঘাটের পানে—
যেথায় তুমি, প্রিয়ে
একলা বসে আপন-মনে
আঁচল মাথায় দিয়ে।
ঘোরে তারা শুকনো পাতার পাকে
কাঁপন-ভরা হিমের বায়ুভরে।
ঝরা ফুলের পাপড়ি তাদের ঢাকে—
লুটায় কেন মরা ঘাসের’পরে।
হল কি দিন সারা।
বিদায় নেবে তারা?
এবার বুঝি কুয়াশাতে
লুকিয়ে তারা পোউষ-রাতে
ধুলার ডাকে সাড়া দিতে চলে—
যেথায় ভূমিতলে
একলা তুমি, প্রিয়ে,
বসে আছ আপন-মনে
আঁচল মাথায় দিয়ে?
মন যে বলে, নয় কখনোই নয়—
ফুরায়নি তো, ফুরাবার এই ভান।