Published on রবীন্দ্র রচনাবলী (http://rabindra-rachanabali.nltr.org)
পূরবী- বকুল-বনের পাখি, ২
পূরবী
সেই নদী যায় সেই কলতান গাহি—
তাহার মাঝে কি আমার অভাব নাহি।
কিছু কি থাকে না বাকি।
বালক গিয়েছে হারায়ে, সে কথা লয়ে
কোনো আঁখিজল যায় নি কোথাও বয়ে?
আর-বার তারে ফিরিয়া ডাকিবে না কি।
যায় নি সেদিন যেদিন আমারে টানে,
ধরার খুশিতে আছে সে সকলখানে;
আজ বেঁধে দাও আমার শেষের গানে
তোমার গানের রাখী।
আবার বারেক ফিরে চিনে লও মোরে,
বিদায়ের আগে লও গো আপন ক’রে।
সেদিন চিনেছ আজিও চিনিবে নাকি।
পারঘাটে যদি যেতে হয় এইবার,
খেয়াল-খেয়ায় পাড়ি দিয়ে হব পার,
শেষের পেয়ালা ভরে দাও হে আমার
সুরের সুরার সাকী।
আর কিছু নই, তোমারি গানের সাথি,
এই কথা জেনে আসুক ঘুমের রাতি।
মুক্তির টিকা ললাটে দাও তো আঁকি।
যাবার বেলায় যাব না ছদ্মবেশে,
খ্যাতির মুকুট খসে যাক নিঃশেষে,
কর্মের এই বর্ম যাক-না ফেঁসে,
কীর্তি যাক-না ঢাকি।
ডেকে লও মোরে নামহারাদের দলে
চিহ্নবিহীন উধাও পথের তলে।
তাহার মাঝে কি আমার অভাব নাহি।
কিছু কি থাকে না বাকি।
বালক গিয়েছে হারায়ে, সে কথা লয়ে
কোনো আঁখিজল যায় নি কোথাও বয়ে?
শোনো শোনো ওগো বকুল-বনের পাখি,
আর-বার তারে ফিরিয়া ডাকিবে না কি।
যায় নি সেদিন যেদিন আমারে টানে,
ধরার খুশিতে আছে সে সকলখানে;
আজ বেঁধে দাও আমার শেষের গানে
তোমার গানের রাখী।
আবার বারেক ফিরে চিনে লও মোরে,
বিদায়ের আগে লও গো আপন ক’রে।
শোনো শোনো ওগো বকুল-বনের পাখি,
সেদিন চিনেছ আজিও চিনিবে নাকি।
পারঘাটে যদি যেতে হয় এইবার,
খেয়াল-খেয়ায় পাড়ি দিয়ে হব পার,
শেষের পেয়ালা ভরে দাও হে আমার
সুরের সুরার সাকী।
আর কিছু নই, তোমারি গানের সাথি,
এই কথা জেনে আসুক ঘুমের রাতি।
শোনো শোনো ওগো বকুল-বনের পাখি,
মুক্তির টিকা ললাটে দাও তো আঁকি।
যাবার বেলায় যাব না ছদ্মবেশে,
খ্যাতির মুকুট খসে যাক নিঃশেষে,
কর্মের এই বর্ম যাক-না ফেঁসে,
কীর্তি যাক-না ঢাকি।
ডেকে লও মোরে নামহারাদের দলে
চিহ্নবিহীন উধাও পথের তলে।