Published on রবীন্দ্র রচনাবলী (http://rabindra-rachanabali.nltr.org)
পূরবী- লীলাসঙ্গিনী, ৩
পূরবী
পাখায় পুষ্পধূলি।
আবার নিভৃতে হবে কি রচিতে
মানসপ্রতিমাগুলি।
সারা হয়ে এল দিন।
বাজে পূরবীর ছন্দে রবির
শেষ রাগিণীর বীন।
এতদিন হেথ ছিনু আমি পরবাসী,
হারিয়ে ফেলেছি সেদিনের সেই বাঁশি,
আজ সন্ধ্যায় প্রাণ ওঠে নিশ্বাসি
গানহারা উদাসীন।
কেন অবেলায় ডেকেছ খেলায়,
সারা হয়ে এল দিন।
নিশীথ-অন্ধকারে।
মনে মনে বুঝি হবে খোঁজাখুঁজি
অমাবস্যার পারে?
মালতীলতায় যাহারে দেখেছি প্রাতে
তারায় তারায় তারি লুকাচুরি রাতে?
সুর বেজেছিল যাহার পরশ-পাতে
নীরবে লভিব তারে?
দিনের দুরাশা স্বপনের ভাষা
রচিবে অন্ধকারে?
চিনি যে তোমারে চিনি।
চোখে নাই দেখি, তবু ছলিবে কি
হে গোপনরঙ্গিণী।
নিমেষে আঁচল ছুঁয়ে যায় যদি চলে
তবু সব কথা যাবে সে আমায় বলে,
আবার নিভৃতে হবে কি রচিতে
মানসপ্রতিমাগুলি।
দেখো না কি, হায়, বেলা চলে যায়—
সারা হয়ে এল দিন।
বাজে পূরবীর ছন্দে রবির
শেষ রাগিণীর বীন।
এতদিন হেথ ছিনু আমি পরবাসী,
হারিয়ে ফেলেছি সেদিনের সেই বাঁশি,
আজ সন্ধ্যায় প্রাণ ওঠে নিশ্বাসি
গানহারা উদাসীন।
কেন অবেলায় ডেকেছ খেলায়,
সারা হয়ে এল দিন।
এবার কি তবে শেষ খেলা হবে
নিশীথ-অন্ধকারে।
মনে মনে বুঝি হবে খোঁজাখুঁজি
অমাবস্যার পারে?
মালতীলতায় যাহারে দেখেছি প্রাতে
তারায় তারায় তারি লুকাচুরি রাতে?
সুর বেজেছিল যাহার পরশ-পাতে
নীরবে লভিব তারে?
দিনের দুরাশা স্বপনের ভাষা
রচিবে অন্ধকারে?
যদি রাত হয় না করিব ভয়—
চিনি যে তোমারে চিনি।
চোখে নাই দেখি, তবু ছলিবে কি
হে গোপনরঙ্গিণী।
নিমেষে আঁচল ছুঁয়ে যায় যদি চলে
তবু সব কথা যাবে সে আমায় বলে,