‘ যেয়ো না, যেয়ো না ' বলি কারে ডাকে ব্যর্থ এ ক্রন্দন।
কোথা সে বন্ধন
অসীম যা করিবে সীমারে।
সংসার যাবারই বন্যা, তীব্রবেগে চলে পরপারে
এ পারের সব-কিছু রাশি রাশি নিঃশেষে ভাসায়ে,
কাঁদায়ে হাসায়ে।
অস্থির সত্তার রূপ ফুটে আর টুটে ;
‘ নয় নয় ' এই বাণী ফেনাইয়া মুখরিয়া উঠে
মহাকালসমুদ্রের'পরে।
সেই স্বরে
রুদ্রের ডম্বরুধ্বনি বাজে
অসীম অম্বর-মাঝে —
‘ নয় নয় নয় '।
ওরে মন, ছাড়ো লোভ, ছাড়ো শোক, ছাড়ো ভয়।
সৃষ্টি নদী, ধারা তারি নিরন্ত প্রলয়।
যাবে সব যাবে চলে, তবু ভালোবাসি —
চমকে বিনাশ-মাঝে অস্তিত্বের হাসি
আনন্দের বেগে।
মরণের বীণাতারে উঠে জেগে
জীবনের গান ;
নিরন্তর ধাবমান
চঞ্চল মাধুরী।
ক্ষণে ক্ষণে উঠে স্ফুরি
শাশ্বতের দীপশিখা
উজ্জ্বলিয়া মুহূর্তের মরীচিকা
অতল কান্নার স্রোত মাতার করুণ স্নেহ বয়,
প্রিয়ের হৃদয়বিনিময়।
বিলোপের রঙ্গভূমে বীরের বিপুল বীর্যমদ
ধরণীর সৌন্দর্যসম্পদ।