Published on রবীন্দ্র রচনাবলী (http://rabindra-rachanabali.nltr.org)
শিশু-ভিতরে ও বাহিরে, ২
শিশু
খোকার কানে,
অসাড়কেও জাগিয়ে তোলেন
চেতন প্রাণে।
খোকার তরে গল্প রচে
বর্ষা শরৎ,
খেলার গৃহ হয়ে ওঠে
বিশ্বজগৎ।
খোকা তারি মাঝখানেতে
বেড়ায় ঘুরে,
খোকা থাকে জগৎ-মায়ের
অন্তঃপুরে।
আমরা থাকি জগৎ-পিতার
বিদ্যালয়ে—
উঠেছে ঘর পাথর-গাঁথা
দেয়াল লয়ে।
জ্যোতিষশাস্ত্র-মতে চলে
সূর্য শশী,
নিয়ম থাকে বাগিয়ে ল’য়ে
রশারশি।
এম্নি ভাবে দাঁড়িয়ে থাকে
বৃক্ষ লতা,
যেন তারা বোঝেই নাকো
কোনোই কথা।
চাঁপার ডালে চাঁপা ফোটে
এম্নি ভানে
যেন তারা সাত ভায়েরে
কেউ না জানে।
মেঘেরা চায় এম্নিতরো
অবোধ ভাবে,
যেন তারা জানেই নাকো
কোথায় যাবে।