সব ফিরে লও দেবী। তব দূত করি
মোরে আর পাঠায়ো না, তব স্বর্ণতরী
দেশে দেশান্তরে লয়ে । জয়ধ্বজা তব
দিগ্দিগন্তে করিয়া প্রচার, নব নব
দিগ্বিজয়ে পাঠায়ো না মোরে। পরপারে
তব রাজ্য কর্মযশধনজনভারে
অসীমবিস্তৃত — কত নগরনগরী,
কত লোকালয়, বন্দরেতে কত তরী,
বিপণিতে কত পণ্য — ওই দেখো দূরে
মন্দিরশিখরে আর কত হর্ম্যচূড়ে
দিগন্তেরে করিছে দংশন, কলোচ্ছ্বাস
শ্বসিয়া উঠিছে শূন্যে করিবারে গ্রাস
নক্ষত্রের নিত্যনীরবতা। বহু ভৃত্য
আছে হোথা, বহু সৈন্য তব ; জাগে নিত্য
কতই প্রহরী। এ পারে নির্জন তীরে
একাকী উঠেছে ঊর্ধ্বে উচ্চ গিরিশিরে
রঞ্জিত মেঘের মাঝে তুষারধবল
তোমার প্রাসাদসৌধ, অনিন্দ্যনির্মল
চন্দ্রকান্তমণিময়। বিজনে বিরলে
হেথা তব দক্ষিণের বাতায়নতলে
মঞ্জরিত-ইন্দুমল্লী-বল্লরীবিতানে,
ঘনচ্ছায়ে, নিভৃত কপোতকলগানে
একান্তে কাটিবে বেলা ; স্ফটিকপ্রাঙ্গণে
জলযন্ত্রে উৎসধারা কল্লোলক্রন্দনে
উচ্ছ্বসিবে দীর্ঘদিন ছলছলছল —
মধ্যাহ্নেরে করি দিবে বেদনাবিহ্বল
করুণাকাতর। অদূরে অলিন্দ- ' পরে
পুঞ্জ পুচ্ছ বিস্ফারিয়া স্ফীত গর্বভরে
নাচিবে ভবনশিখী, রাজহংসদল
চরিবে শৈবালবনে করি কোলাহল
বাঁকায়ে ধবল গ্রীবা, পাটলা হরিণী
ফিরিবে শ্যামল ছায়ে । অয়ি একাকিনী,