Published on রবীন্দ্র রচনাবলী (http://rabindra-rachanabali.nltr.org)
চিত্রা - অন্তর্যামী, ৩
চিত্রা
চিনি না যে পথ সে পথের ‘ পরে
চলেছি পাগল-বেশে।
কভু বা পান্থ গহন জটিল,
কভু পিচ্ছল ঘনপঙ্কিল,
কভু সংকটছায়াশঙ্কিল,
বঙ্কিম দুরগম —
খরকণ্টকে ছিন্ন চরণ,
ধুলায় রৌদ্রে মলিন বরন,
আশেপাশে হতে তাকায় মরণ
সহসা লাগায় ভ্রম।
তারি মাঝে বাঁশি বাজিছে কোথায়,
কাঁপিছে বক্ষ সুখের ব্যথায়,
তীব্র তপ্ত দীপ্ত নেশায়
চিত্ত মাতিয়া উঠে।
কোথা হতে আসে ঘন সুগন্ধ,
কোথা হতে বায়ু বহে আনন্দ,
চিন্তা ত্যজিয়া পরান অন্ধ
মৃত্যুর মুখে ছুটে।
খ্যাপার মতন কেন এ জীবন,
অর্থ কী তার, কোথা এ ভ্রমণ,
চুপ করে থাকি শুধায় যখন —
দেখে তুমি হাস বুঝি।
কে তুমি গোপনে চালাইছ মোরে
আমি যে তোমারে খুঁজি।
রাখো কৌতুক নিত্যনূতন
ওগো কৌতুকময়ী।
আমার অর্থ তোমার তত্ত্ব
বলে দাও মোরে অয়ি।
আমি কি গো বীণাযন্ত্র তোমার,
ব্যথায় পীড়িয়া হৃদয়ের তার