এ প্রাণ বীণার মতো ঝংকারি উঠেছে কত
আসিয়াছে শুভক্ষণ কত অনুকূল —
মনে পড়ে তারি সাথে কতদিন কত প্রাতে
সেই চাঁপা! সেই বেলফুল!
সেই-সব এই-সব, তেমনি পাখির রব,
তেমনি চলেছে হেসে জাগ্রত সংসার।
দক্ষিণ-বাতাসে-মেশা ফুলের গন্ধের নেশা
দিকে দিকে ব্যাকুলতা করিছে সঞ্চার।
অবোধ অন্তরে তাই চারি দিক -পানে চাই,
অকস্মাৎ আনমনে জেগে উঠে ভুল —
বুঝি সেই স্নেহসনে ফিরে এল এ জীবনে
সেই চাঁপা! সেই বেলফুল!
আনন্দপাথেয় যত সকলি হয়েছে গত,
দুটি রিক্তহস্তে মোর আজি কিছু নাই।
তবু সম্মুখের পানে চলেছি কঠিন প্রাণে,
যেতে হবে গম্যস্থানে, ফিরে না তাকাই।
দাঁড়ায়ো না, চলো চলো, কী আছে কে জানে বলো
ধূলিময় শুষ্কপথ, সংশয় বিপুল —
শুধু জানিয়াছি সার কভু ফুটিবে না আর
  সেই চাঁপা! সেই বেলফুল!
আমি কিছু নাহি চাই, যাহা দিবে লব তাই
চিরসুখ এ জগতে কে পেয়েছে কবে।
প্রাণে লয়ে উপবাস কাটে কত বর্ষমাস,
তৃষিত তাপিত চিত্ত কত আছে ভবে।
শুধু এক ভিক্ষা আছে, যেদিন আসিবে কাছে
জীবনের পথশেষে মরণ অকূল