নামহারা এই নদীর পারে
ছিলে তুমি বনের ধারে
     বলে নি কেউ আমাকে।
শুধু কেবল ফুলের বাসে
মনে হত খবর আসে
     উঠত হিয়া চমকে।
শুধু যেদিন দখিন হাওয়ায়
বিরহ-গান মনকে গাওয়ায়
     পরান-উন্‌মাদনি,
পাতায় পাতায় কাঁপন ধরে,
দিগন্তরে ছড়িয়ে পড়ে
     বনান্তরের কাঁদনি,
সেদিন আমার লাগে মনে
আছ যেন কাছের কোণে
     একটুখানি আড়ালে,
জানি যেন সকল জানি,
ছুঁতে পারি বসনখানি
     একটুকু হাত বাড়ালে।

এ কী গভীর, এ কী মধুর,
এ কী হাসি পরান-বঁধুর
     এ কী নীরব চাহনি,
এ কী ঘন গহন মায়া,
এ কী স্নিগ্ধ শ্যামল ছায়া,
     নয়ন-অবগাহনি।
লক্ষ তারের বিশ্ববীণা
এই নীরবে হয়ে লীনা
     নিতেছে সুর কুড়ায়ে,
সপ্তলোকের আলোকধারা
এই ছায়াতে হল হারা
     গেল গো তাপ জুড়ায়ে।